এবিএনএ: পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর। মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব। টানা দুইবছর মহামারীর করাল স্রোতে ঈদের আনন্দ অনেকটাই ফিকে হয়ে উঠেছিল। সারা বিশ্বেই ছিল প্রায় একই হাহাকার। এবার সেই মহামারীর রেশ কাটিয়ে অনেকটাই আনন্দ উল্লাসে সারাদেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের আনন্দ আপনজনের সাথে ভাগ করে নেওয়ার জন্য সকলেই চিরচেনা ব্যস্ত ঢাকা ছেড়ে গিয়েছে নিজ জেলায়। ব্যস্ত ঢাকা ঈদের সময় অনেকটা একা হয়ে যায়। সবাই ঢাকাকে যেন তার প্রয়োজনেই শুধু ব্যবহার করে। ফাকাঁ ঢাকাতে যারা থেকে যায় তারা অনেক বেশি আনন্দে থাকে। ব্যস্ত ঢাকার অচেনা রূপটা ঢাকাবাসীদের কাছে অনেক প্রিয়। তারা কোনো ভাবেই এই ফাঁকা ঢাকা দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় না।
আজকেও সকাল থেকেই সবাই পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদের আনন্দ আরেকটু বাড়িয়ে তোলার জন্য বিভিন্ন জায়গার ঘুরতে গিয়েছে। আর গত দুইবারের না ঘুরতে পারার ক্ষোভ যেন এবার পুষিয়ে নিচ্ছে। এবার বাড়তি ভাড়ার উদ্যেক থাকলেও রাস্তায় যাতায়াতে ছিল সকলের স্বস্তি। তবে অতিরিক্ত দ্রব্য মূল্যের কারনে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে ছিল হতাশা। পরিবারের সাথে সকলেই ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে চায় কিন্তু অতিরিক্ত মূল্য সেই আনন্দে অনেকটাই ব্যাঘাত সৃষ্টি করে। তবুও এবার করোনা প্রকোপ না থাকায় সকলের মাঝেই বিরাজ করেছে নতুন আনন্দ। কত আশায় ছিল প্রত্যেকেই সেই নতুন ভোরের নতুন আলোর। দেশে মসজিদ গুলোতে সকাল থেকেই অংশ নেয় লাখ মুসলিম। সকলেই সব বিভেদ ভুলে নতুন আনন্দে একাকার হয়েছে। গতকাল ও অনেকে ঢাকা ছেড়ে গিয়েছে। গতকাল সদরঘাট থেকে লঞ্চ গুলো ছেড়ে যায়।
যাত্রীর অভাবে সারাদিন খালী থাকলের দিনশেষে লঞ্চ গুলো যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। জন দুর্ভোগ অনেকটাই কম ছিল গতকালের যাতায়াতে। অনেকেই ফাঁকা ঢাকার সুযোগ কাজে লাগিয়ে শেষ সময়ে পরিবারের কাছে ছুটে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেনি।
এছাড়াও ঢাকায় বাইরেও ঈদের আনন্দ কোনো কমতি ছিল। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় পালিত হয়েছে সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। এটি শোলাকিয়ায় ১৯৫ তম জামাত। প্রথম ১৮২৮ সালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় সোয়া লাখ মানুষ নিয়ে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। সেই থেকেই শোলাকিয়া নামের শুরু। দুইবছরের মহামারীর প্রকোপ কাটিয়ে এবার আবোরো শোলাকিয়া প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে মুসলিম উম্মার ঈদের জামাতে। নিরাপত্তার যথাযথ প্রয়োগ ছিল। কতৃপক্ষ জানায়, এবার ফোন ও জামায়াতে নিয়ে যাওয়া যায়নি। চিরচেনা বন্দুকের গুলির শব্দে নামাজ শুরু রীতি অনুসরণ করেই জামাত শুরু হয়। বিজিবি, আনসার, পুলিশ উপস্থিত ছিল। নিরাপত্তার কোনো কমতি ছিলনা। সুষ্ঠভাবে ঈদের জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়। সাত একর আয়তনের মাঠে ২৬৫ টি কাতার হয়েছে। এছাড়াও ঢাকা বাইরে প্রতি জেলায় ঈদের জামাত সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়। সকলেই কাছেই এবারের ঈদ বহুল প্রতীক্ষিত। দুইবছরের ভয়াল মহামারী কাটিয়ে সকলেই এই নতুন ভোরের অপেক্ষায় ছিল। পবিত্র রমজানের পর এই পবিত্র ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সৃষ্টিকর্তার কাছে মুসলিম উম্মার সর্বপ্রথম প্রার্থনা এটাই ছিল সেই ভয়াল মহামারীর দিনগুলো যেন আর ফিরে না আসে। সকলেই সুস্থ সুন্দর ভাবে বাংলাদেশের সমৃদ্ধি প্রার্থনা করেছেন।